মডার্ন কাস্টমার সেলস জার্নি প্রসেস (Modern Customer Sales Journey Process) হলো একজন কাস্টমারকে Awareness করা থেকে সরু করে এডভোকেসি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া ও তার বিস্তারিত প্রসেস।

কাস্টমার জার্নি পুরো প্রক্রিয়াটি এমনভাবে ডিজাইন করা যেখানে একজন কাস্টমার প্রথমে আপনার প্রথমে পণ্য বা ব্র্যান্ড সম্পর্কে সচেতন হবে। (Awareness) – অ্যাডস, এস ই ও, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা অন্য যে কোনো মাধ্যমে।
(Interest) – এরপর, তারা আগ্রহী হয়ে ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আরও তথ্য খোঁজে। (Consideration) – কাস্টমার আপনার কোনো ই-বুক, কেস স্টাডি, বা ওয়েবিনারের মাধ্যমে আপনার থেকে পণ্য বা কোনো সার্ভিস নেওয়ার জন্য বিবেচনা করে।
(Evaluation) – পরে, কাস্টমার পণ্যের মান যাচাই করে রেটিং, রিভিউ এবং ডেমো/ট্রায়াল ব্যবহার করে। (Decision) – তারপর যখন তারা কিনতে আগ্রহী হয়, তখন ডিসকাউন্ট, কার্ট অ্যাব্যান্ডনমেন্ট ইমেইল বা সরাসরি সাপোর্টের মাধ্যমে তাদের পণ্য কেনার সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত করা হয়।
এরপরে, তারা সহজ চেকআউট এবং সহজ পেমেন্ট অপশন ব্যবহার করে পণ্য ক্রয় করে (Purchase)
ক্রয়ের পরে, গ্রাহককে আবারও পুনরায় সে প্রোডাক্ট বা অন্য কোনো প্রোডাক্ট কেনার আগ্রহী করতে আপ-সেল, সাবস্ক্রিপশন বা রিওয়ার্ড প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের কাছে পৌঁছানো হয় (Repeat)
ধীরে ধীরে, পণ্যের মান ও কাস্টমাইজড যোগাযোগের মাধ্যমে তারা ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বস্ত হয়ে উঠবে (Loyalty)। সবশেষে, গ্রাহক সন্তুষ্ট হলে তারা ব্র্যান্ডের প্রচারক বা অ্যাডভোকেট হয়ে উঠে (Advocacy) – যেমন: রেফারেল, রিভিউ এবং ওয়ার্ড-অফ-মাউথের মাধ্যমে নতুন গ্রাহক আনতে সহায়তা করে। (প্রোডাক্ট বা সার্ভিস খারাপ হলে ও দুর্নাম করবে সেটা মনে রাখবেন)

১. Awareness
এই ধাপে কাস্টমার প্রথমবারের মতো আপনার ব্র্যান্ড বা পণ্য সম্পর্কে জানবে। যাকে Awareness বলা হয়। আপনার ব্র্যান্ড, প্রোডাক্ট/ সার্ভিস সম্পর্কে মানুষকে জানানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
Ads: টিভি, সোশ্যাল মিডিয়া(Facebook, Youtube, Tiktok, Google etc ), অথবা ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
PR: পত্রিকা, নিউজ বা মিডিয়া, স্পনসর এর মাধ্যমে প্রচারণা করতে পারেন।
Content: ব্লগ, ভিডিও, বা ইনফোগ্রাফিক্স তৈরি করে বিভিন্ন ইনফরমেশন বা ব্র্যান্ড সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেন।
২. Interest
এই পর্যায়ে কাস্টমার পণ্য বা ব্র্যান্ড সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠে।
Email: কাস্টমারদের ইমেইল সংগ্রহ করে তাদেকরে ইমেইল করা।
Social: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের পোস্ট বা স্টোরি শেয়ার করা।
Website Visitor: ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কাস্টমার ওয়েবসাইটে এসে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানবে।
৩. Consideration
এই ধাপে কাস্টমার আপনার পণ্য কেনার কথা ভাবতে শুরু করবে। আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস তার কোনো হেল্প করতে পারলে বা কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারলে সেটা সে কেনার জন্য প্রস্তুত হন।
eBooks: পণ্যের ব্যাপারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন দিয়ে বিস্তারিত ই-বুক তৈরী করুন। প্রয়োজনে সেটি ফ্রি ডাউনলোড করার সুযোগ করে দিন।
Case Study: অন্যদের রেজাল্ট পাওয়া গল্প বা স্টোরি শেয়ার করতে পারেন।
Webinars: পণ্যের ফিচার ও সুবিধা নিয়ে সরাসরি লাইভ মিটিং বা ওয়েবিনার আয়োজন করতে পারেন।
৪. Evaluation
এই পর্যায়ে কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অন্য ব্র্যান্ডের সাথে তুলনা করবে।
Rating/ Reviews: অন্য কাস্টমারদের মতামত দেখতে চাইবে।
Competitive Pricing: আপনার পণ্যের দাম অন্যদের সাথে তুলনা করবে।
Demo/Trial: আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নেওয়ার পূর্বে সেটি দেখার সুযোগ করে দিন [ডিজিটাল প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর। যেমনঃ আমাদের কাস্টমার আমাদের থেকে ওয়েবসাইট ডিজাইন বা ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন সার্ভিস নেওয়ার পূর্বে ডেমো দেখতে চায়]
৫. Decision
কাস্টমার পণ্য কিনতে রাজি। তখন কাস্টমার অফার খোঁজে তারপর সেই মুহূর্তে কোনো ডিসকাউন্ট পেয়ে গেলেই তা অর্ডার করে ফেলেন।
Discounts/Offers: কাস্টমারকে কেনার জন্য বিশেষ ছাড় বা ডিসকাউন্ট দিতে পারেন।
Cart Abandonment Emails: প্রোডাক্ট কার্টে যুক্ত করে সেটা অর্ডার কমপ্লিট না করলে পুনরায় তাকে কেনার জন্য মনে করিয়ে দিন। [এটা অনেক কার্যকর]
Consultation: কাস্টমারের মনে যে সকল প্রশ্ন রয়েছে তা ওয়েবসাইটে যুক্ত করুন বা মেসেজ করলে তা সমাধান করুন। প্রশ্নের উত্তর দিন।
৬. Purchase
এই পর্যায়ে কাস্টমার আপনার পণ্য বা সার্ভিস অর্ডার করে ফেলে।
Easy Checkout: তাই অর্ডার করার সময় যেন খুব ইজি চেকআউট অপশন থাকে।
Payment Option: সহজ পেমেন্ট মেথড ব্যবস্থা থাকতে হবে।
Order Confirmation: কাস্টমার যে অর্ডারটি করেছে তা নিশ্চিত করে তাকে একটি মেসেজ দিন বা কল করুন। তা না হলে কাস্টমার বুঝতে পারে না আদৌ কি আপনি তার অর্ডারটি পেয়েছেন কিনা। [যে কারণে কাস্টমার আবার অর্ডার করে/ যে কনফিউশন থেকে ডাবল অর্ডার করে ]
৭. Repeat
কাস্টমার যখনি আপনার থেকে একবার অর্ডার করেছে। তার মানে সে আপনাকে বিশ্বাস করে তাই অর্ডার করেছে। এখন তার কাছে পূনরায় সে প্রডাক্টি তার প্রয়োজন হলে আবারো সেল করুন বা নতুন কোনো প্রোডাক্ট সেল করুন।
Up-sell/ Cross-Sell: এ সম্পর্কে [] নাম্বার পেজে জানতে পারবেন।
Subscription: আপনার প্রোডাক্টের সাবস্ক্রিপশন করে কাস্টমারকে অফার করুন। এতে কাস্টমার সহজে কিনতে পারবে এবং আপনি সেল করেত পারবেন [এটি ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর]
Reward: কাস্টমারকে আপনার ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করার কারণে যেকোনো রেওয়ার্ড দিতে পারেন।
৮. Loyalty
যারা আপনার থেকে ৪/৫ বা তরো বেশি বার অর্ডার করেছে তারাই আপনার লয়াল কাস্টমার। তাদেরকে এক্সট্রা কেয়ার করুন।
Loyalty Program: তাদের জন্য লয়ালিটি প্রোগ্রাম, পয়েন্ট সংগ্রহ বা বিশেষ সুবিধার সুযোগ করতে পারেন।
VIP Access: ভিআইপি এক্সেস বা কোনো এক্সক্লুসিভ অফার দিতে পারেন।
Connection: ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে পারেন। কল করতে পারেন বা মেসেজ করতে পারেন [যেমনটা Shopno, Chaldal থেকে করা হয়]
৯. Advocacy
তারপর একজন লয়াল কাস্টমার আপনার ব্রান্ডের জন্য এডভোকেসি হয়ে যায়। কাস্টমার অন্যদের ব্র্যান্ডের কথা বলে। (ভালো হলে ভালো প্রচার করে , খারাপ হলে খারাপ প্রচার করে)
Referral Bonus: এখানে আপনি তাদের জন্য রেফারেল বোনাস সিস্টেম যুক্ত করতে পারেন।
UGS: কাস্টমারের তৈরী করা কনটেন্ট – কাস্টমার নিজেদের পেজ বা প্রোফাইল থেকে আপনার প্রোডাক্ট রিভিউ বা টেস্টিমোনিয়াল শেয়ার করবে।
Community: লয়াল কাস্টমারদের নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করুন। হতে পারে একটি ফেইসবুক গ্ৰুপ বা একটি হোয়াটস্যাপ গ্ৰুপ , ইত্যাদি।
এখন আপনি বলতে পারেন এতকিছু কাস্টমার কখন করে?
আমি তো ফেসবুকে অ্যাড রান করি আর আমার সেল হয়।
এসব প্রক্রিয়াগুলো কাস্টমারের কিছুটা Conscious Mind এ হয়ে থাকে আর কিছু Subconscious Mind এ হয়ে থাকে। তাই অনেক সময় কাস্টমার নিজেও জানে না। অটোমেটিক হতে থাকে।
Conscious Mind: মানুষের সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তথ্য বিশ্লেষণের জন্য কাজ করে।
Subconscious Mind: ব্র্যান্ড ইমেজ, ইমোশনাল কানেকশন, এবং পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে অবচেতন মনে সিদ্ধান্ত নেয়। যা ব্র্যান্ড বিল্ডিং এ অনেক কাজ করে।
